মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা এক চার বছরের শিশুর শরীরের মিলেছে H9N2 ভাইরাসের স্ট্রেন। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, এতে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবারই পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল মালদায় যান।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর সংস্পর্শে আসা কোন ব্যক্তির দেহে মেলেনি বার্ড ফ্লু ভাইরাসের স্ট্রেন। সুতরাং মানবদেহ থেকে মানবদেহে সংক্রমণের কোন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী হাঁস মুরগির ডিম, মাংস খাওয়াতেও কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেই মূলত শিশুরা H9N2 ভাইরাসের আক্রান্ত হন।
৫ বছর পর দেশে ফের বার্ড ফ্লু ঘিরে ছড়িয়েছে আতঙ্ক।অসময়ে মালদায় মানবদেহে বার্ড-ফ্লু আতঙ্কে রীতিমতো হৈচৈ পরে গিয়েছে ।স্বাস্থ্য সবিচ নায়ারণস্বরূপ নিগম বলেছেন, ‘কড়া নজরদারি চাললানো হলেও হাস, মুরগির মধ্যেই বার্ড ফ্লু’ ভাইরাস ধরা পড়েনি। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেই রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। এছাড়া হাঁস-মুরগির মাংস, কিংবা ডিম খাওয়া নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা কিংবা সতর্কবার্তাও নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি’।
যদিও প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, প্রাণী বা মানুষের মধ্যে বার্ড-ফ্লুর কোনও ঘটনা ঘটেনি। এনআইভি (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি), পুনে থেকে একটি পুরানো কেস রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেখানে মালদহের কালিয়াচকের এক শিশুর শরীরে পশুদের মধ্যে H-Nine.N-2 নামের ভাইরাস পাওয়া গেছে। তাও ছয় মাস আগে, যা বুধবার পুনে থেকে স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছিল।
রাজ্যের কোথাও মানুষের মধ্যে কোনও বার্ড-ফ্লু রোগ দেখা যায়নি। বার্ড-ফ্লু হলে, রক্তের নমুনা থেকে H-5.N1 ভাইরাস পাওয়া গেছে। কিন্তু পুনের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের রিপোর্টে এর উল্লেখ নেই। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এ ধরনের ঘটনাকে ঘিরে যাতে অকারণে বার্ড-ফ্লুর গুজব না ছড়ায় সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কালিয়াচক থানার আলিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চার বছরের এক অসুস্থ শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে মহারাষ্ট্রের পুনে পাঠানো হয়েছিল। ছয় মাস পর আজ শিশুটির রক্তের নমুনার রিপোর্ট এসেছে। বলা হচ্ছে, এটি বার্ড-ফ্লু নয়, শিশুর শরীরে পাওয়া H9.N-2-এর মতো ভাইরাস। আর যাকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মালদহের বিভিন্ন প্রান্তে।অযথা আতঙ্ক ছড়ানো অথবা সামাজিক মাধ্যমে বার্ড-ফ্লু গুজব ছড়ানো হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বার্ড-ফ্লু ভাইরাস মূলত মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি থেকে ছড়ায়। শীত মৌসুমে এ ধরনের সংক্রমণ দেখা যায়। মালদায় বার্ড-ফ্লু হলেও মানুষের শরীরে এমন সংক্রমণ এখনও রাজ্যের কোথাও পাওয়া যায়নি। মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ্ত ভাদুড়ি জানিয়েছেন যে H-nine.N2 ভাইরাসের সঙ্গে পশু-পাখির যোগসূত্র রয়েছে। যা ওই সময় কালিয়াচকের ওই চার বছরের শিশুর দেহে পাওয়া যায়। এখন মামলাটি অনেক পুরনো।
জানুয়ারি মাসে কালিয়াচক থেকে শিশুটির রিপোর্ট পাঠানো হয়। সেই মামলা এতদিন পুরনো হয়ে গেছে। কালিয়াচকের শিশুটি অনেক আগেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। রক্তের নমুনা চালানের অনেক পুরানো রিপোর্ট দেরিতে পৌঁছানো অস্বাভাবিক নয়।
Source-indianexpress