রাজ্যের লোকসভা ভোট চলছে,এরই মাঝে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম পূর্ব বর্ধমানের কালনা থেকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল ও বিজেপি কে তিনি বলেন “চোর চোরের বিরুদ্ধে কোনদিন বলে না, ডাকাত ডাকাতের বিরুদ্ধে যায় না। কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল দুটো সরকারই চোরের সরকার। রাজ্য সরকার কয়লা, বালি, গরু চাকরি চুরি করছে আর কেন্দ্র সরকার দেশের সম্পদ চুরি করছে। তাই এই দুই সরকারকেই পরাজিত করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার সিপিআই(এম) কালনা শহর এরিয়া কমিটির ডাকে এই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন। সভা পরিচালনা করেন সিপিআই(এম) নেতা স্বপন ব্যানার্জি।
মুর্শিদাবাদের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম তার লোকসভা কেন্দ্রে ভোট শেষ হয়েছে ,তিনি আত্মবিশ্বাসী তিনিই জিতবেন|এবারের লোকসভা ভোটে ও বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস একসঙ্গে লড়ছে|এবার তারা আশাবাদী কিছু স্থির তারা নিশ্চিতভাবে জিতছে|
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী নীরব খাঁর সমর্থনে বলতে গিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, “দেশের শ্রমিক-কৃষকরা বিপন্ন। বিজেপি সরকার অন্নদাতা কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছে। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। শ্রমিকরাও কাজ হারাচ্ছেন। কাজের নিরাপত্তা নেই রাজ্যে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বিকল্প নীতি নিয়ে একমাত্র লাল ঝান্ডাই পারে মানুষকে বাঁচাতে। মোদী-মমতাকে পরাস্ত করে বামপন্থীদের জয়ী করে সংসদে জনগণের কণ্ঠস্বরকে জোরদার করতে হবে। বিজেপি ও তৃণমূল সমঝোতা করে লুটের রাজত্ব কায়েম রাখতে চাইছে। ওদের নীতির কারণেই দেশ বিপদের কিনারায় এসে পৌঁছে গেছে। ”
তিনি আরো বলেন-“নোটবন্দি করে কালো টাঁকা উদ্ধার হয়নি। ইলেকটোরাল বন্ডের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তোলা আদায় করেছে মোদী- মমতা। ফলে ওষুধের দাম বাড়ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মোদী সরকার নয় লক্ষ কোটি টাকা আদানি-আম্বানিদের ছাড় দিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। খনি রেল বন্দর বেসরকারিকরণ করছে মোদী সরকার।
পশ্চিমবঙ্গে কারখানা হতে দেয়নি মমতা। মমতার সাথে ছিল বিজেপি। এসব কুকীর্তি চাপা দিতে সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নিচ্ছে। গরিব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভাগ করে দিতে চাইছে।
তাই দেশের সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতা ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যাধিক্যের সুবিধা নিয়ে এবং রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার করে আধিপত্যবাদী-সাম্প্রদায়িক মোদীর রাজত্ব ফ্যাসিস্ত কায়দায় শ্রমজীবীর অধিকারের ওপর বুলডোজার চালানো হচ্ছে।
পাশাপাশি ভারতকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে অসম সমাজে পরিণত করা হচ্ছে। একই সাথে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ চাপিয়ে বিভাজনের রাজনীতিতে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে। ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের নেতা-নেত্রীদের সিবিআই- ইডি-আয়কর দপ্তর দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আবার এঁরাই বিজেপি-তে যোগ দিলে যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ উবে যাচ্ছে। ”
বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে শ্রমজীবীদের ওপর আক্রমণ আরও বাড়বে। এরাজ্যেও শ্রমজীবীদের ওপর অত্যাচার ও জুলুমবাজি চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল সরকার। তারাও মানুষের অর্জিত অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সীমাহীন বঞ্চনা আর লুঠতরাজ চলছে। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের মিথ্যাচার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের অঙ্গ প্রতঙ্গে সব ভণ্ডামির মুখোশ।
তৃণমূল সরকার শ্রমজীবী মানুষের বিরুদ্ধে হাঁটছে। এবারকার লোকসভা ভোট দেশবাসী তথা মেহনতি মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই দেশ, দেশের মানুষের সম্ভ্রম ও অর্জিত অধিকারগুলি রক্ষা করার নির্বাচন।
তিনি বলেন, তৃতীয় দফা ভোটেই তৃণমূলের দফারফা হয়ে গেছে। এখন বিজেপি’র সঙ্গে রফা করে বাঁচার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যকে বাজি ধরে ভাইপো’কে বাঁচাতে মমতা ব্যানার্জি নাগপুরের সঙ্গে রফা করেছেন। ওদের রফায় রাজ্যের সর্বনাশ হতে দেওয়া যাবে না, দুই দলকেই পরাস্ত করতে হবে। বিজেপি’র হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে এবং তৃণমূলের হাত থেকে রাজ্যকে বাঁচাতে হলে ওদের পরাস্ত করতে হবে। – (সিপিআই(এম))